নৌকা এবং কয়েকটি তীব্র কল্পনা
প্রিয় তিলোত্তমা,
আমাদের কাঠের বাড়িটার সামনে একটা বিশাল
হৃদ থাকবে !
সেখানে একটা মাঝারি আকৃতির একটা নৌকা
সারাদিন ভেসে বেড়াবে।
জ্যোৎস্নার সময়ে আমরা কবিতার বই হাতে
নিয়ে হৃদের পাড়ে যাব। তুমি আলতা দেয়া লাল পা নৌকায় রাখতেই নৌকা কেঁপে উঠবে। সাথে সাথে
হৃদের পানিতে থাকে চাঁদের আলোটাও, তাদের ঘুম ভাঙবে ! ওরা জানবে, কবিতা পড়ার সময় এসেছে
রাতের নির্জনে ! ঘাসবনের জোনাকিরা সব জেগে উঠবে। ওরা পাখা নেড়ে সবুজ আলো জ্বেলে আমাদের
হৃদের উপর ভেসে বেড়াবে। সবুজ আলোয় বাতাস কেঁপে উঠবে !
নাম না জানা ফুল ফুটবে জোস্নার আলোয়।
সেই ফুল থেকে চাঁদের বাতাসের গন্ধ ভেসে আসবে !
এমন সময়ে -
আমি তুমি নৌকায় গিয়ে বসব।
তুমি শাড়ি ঠিক করে আয়েশ করে বসবে।
আর জানোই তো, আমি তো অলস -
শুয়ে পড়ব আমি, তোমার কোলে মাথা রেখে…
এরপর হাতে নেব কবিতার বই।
সুনীল, রুদ্র কিংবা রবীন্দ্র…
বাতাসে নৌকা দুলবে
তুমি মৃদু ভয়ে কেঁপে উঠব
তোমার শাড়ির আঁচল এলো হবে
জ্যোৎস্না এবং জোনাকির আলোয় বইয়ের পাতা
উলটে আমি কবিতা পড়ব –
তুমি শুনবে
শুনতে শুনতে অন্যমনস্ক হয়ে আমার চুলে
আঙুল দিয়ে বিলি কাটবে
তিলোত্তমা, তখন তুমি হৃদের শান্ত জলে
রঙিন একটা প্রজাপতি দেখতে পাবে –
যার ডানায় পৃথিবীর সব অপূরণীয় ইচ্ছের
রং খুঁজে পাওয়া যাবে…
জ্যোৎস্না শেষ হলে আমার কবিতা পড়া শেষ
হবে
তোমার অন্যমনস্কতা বিলুপ্ত পাবে
জোনাকি সব নিভে যাবে
হৃদের জল শুঁকিয়ে যাবে
সাথে সাথে সেই প্রজাপতিকেও আর খুঁজে পাওয়া
যাবে না
কিন্তু সেদিন জ্যোৎস্না শেষ হবে না...