ফুসফুসে অক্সিজেন টেনে



প্রায়ই বিকেল বেলার দিকে আমি আর তুমি টিএসসির দিকে হেঁটে বেড়াতাম। 

নয়তো পাশাপাশি বসে থাকতাম। এমন ধরনের পরিবেশে তুমি প্রথমে চুপ থাকতে । প্রায় ঘণ্টাখানেক । তারপর দেশ, সমাজ রাজনীতি নিয়ে এক এক করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে মন থেকে। ওসব কথা আমার কাছে কঠিন লাগে। তাই আমি শুধু শুনে যেতাম। কিছু বুঝতাম না। মাথা নাড়তাম। হা – হু করতাম। তুমি অনর্গল বলে যেতে। 
যদিও আমি কিছু বুঝতাম না তবে তোমার অভিব্যক্তি দেখে মনে হত যা বলছ তা সবই যুক্তিযুক্ত। এমনটাই হওয়া চাই।


এসব কঠিন কথা বলা শেষ হলে তুমি কিছুক্ষণ বসে থাকতে চুপ হয়ে জোরে জোরে বুক ভরে নিশ্বাস নিতে। নতুন করে বেঁচে থাকার জন্য ফুসফুসে তাজা অক্সিজেন টেনে নিতে। আমিও তোমায় দেখে দেখে এই জঞ্জাল ভরা শহরে নতুন উদ্যমে বেঁচে থাকা ইচ্ছে খুঁজে পেতাম।   

বছরখানেক হল তোমার সাথে টিএসসিতে বসে ওসব কঠিন আলাপ শোনা হয় না। বেঁচে থাকার জন্য ফুসফুসে অক্সিজেন টানা হয় না। চারদিকে আজকাল সব মন খারাপ করা ঘটনা ঘটছে তিলোত্তমা ! নিষ্পাপ মানুষকে মেরে ফেলছে, ছোটবাচ্চাগুলিকে মানুষরূপী জানোয়ারগুলি খুবলে খেয়ে ফেলছে !

এগুলি দেখে দেখে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছেটাও মরে যাচ্ছে।

তুমি কোথায় তিলোত্তমা ? একটু পাশে এসে বস। হাতটা ধর আমার। একসাথে বুক ভরে নিশ্বাস নেই আমরা। ফুসফুসে তাজা অক্সিজেন টেনে নতুন করে বেঁচে উঠি !

কিন্তু বহুদিন হয়ে গেল, তুমি নেই তিলোত্তমা… 

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হঠাৎ করেই হ-য-ব-র-ল [১]

মায়ের পেটে কাটানো দিনগুলিতে বই পড়া

দারুণ কিছু ক্ষমতা !