খানাখন্দ পেরিয়ে দুই ডজন চুড়ি
প্রিয় তিলোত্তমা,
আজ তোমার জন্য দুই ডজন
চুড়ি কেনা হল। একডজন তোমার প্রিয় রঙের আর অন্য ডজন আমার প্রিয় রঙের। সেগুলি এখন রাখা
আছে আমার ঘরের বুকশেলফের বড় বইগুলির পেছনে। কেউ যেন জানতে না পায়, তাই গোপনে রাখা
!
অনেক যত্ন করে সেগুলিকে
টিএসসি থেকে বাসায় নিয়ে এসেছি। যে পথে আজ বাসায় এসেছি সে পথটা অসংখ্য খানাখন্দে ভরপুর
ছিল। মনে হচ্ছিল যে রাস্তা কম – খানাখন্দ বেশি ! তিলোত্তমা, তুমি কি খানাখন্দ চেন
? রাস্তা ভেঙে গিয়ে যদি গর্ত তৈরী হয় তবে তাকে খানাখন্দ বলে। ওরা ফাঁকি দিয়ে রাস্তাটা
বানিয়েছিল, তাই এই অবস্থা। আমাদের সম্পর্কে যেন এরকম না হয় !
রিক্সা অনেক কাঁপছিল
খানাখন্দগুলি পার হওয়ার সময়ে। ভাবছিলাম সবকটা চুড়ি ভেঙেচুড়ে একাকার হবে। ভাগ্য ভাল
! একটাও ভাঙেনি ! বাসায় এসে দেখি চব্বিশটা চুড়ি’ই বেঁচে আছে !
তিলোত্তমা, আমাদের কিন্তু
এখনও দ্যাখা হয়নি। আজ ভাবলাম, প্রথম যেদিন দ্যাখা হবে আমাদের সেদিন তোমাকে এই দুই ডজন
চুড়ি উপহার দেব। আমার পাশে বসে নিজ হাতে চুড়ি পড়বে। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখব।
চুড়ি পড়া হয়ে গেলে হাত
দুটো আমার কানের কাছে এনে হাত নেড়ে চুড়ির শব্দ করবে তুমি। আমি চোখ বন্ধ করে সেই শব্দ শুনব, আনন্দে
আমার চোখ ভিজে উঠবে…
আর মনে মনে বলব – “এতদিন
কোথায় ছিলে তিলোত্তমা, আসনি কেন আমার জীবনে ?”
তিলোত্তমা, সেদিন যদি
আমি নিজে তোমার হাতে চুড়ি পড়িয়ে দিতে চাই তুমি কি মানা করবে ?
প্রথম সাক্ষাৎ-এ হাত
স্পর্শ করাটা কি বেশি স্পর্ধার ?!