পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

তিলোত্তমার আয়না

ছবি
এই যে তিলোত্তমা, হ্রদের জলে নিজেকে আর কতদিনই বা দেখতে পাবে ? যে হারে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে হয়তো কাল পরশুই  মরুভূমি হয়ে যাবে  নিটোল জলে ভরাট হ্রদটা । বলছিলাম কি যে, আয়নায় নিজেকে দেখতে শেখ। আয়না ধরতে শেখ। আগামী শরৎ-এ তোমার কাছে এলে একটা আয়না নিয়ে আসব, রুপোর প্রলেপ দেয়া। তিলোত্তমা, দিনে কয়বার হ্রদের জলে নিজেকে দেখ ? দুবার? তিনবার ? নাকি আরও বেশি ? বৃষ্টির দিনে কিভাবে দেখতে নিজেকে ? বৃষ্টির ফোঁটায় পানি কেঁপে উঠে বলে নিজের প্রতিচ্ছবিও ভূমিকম্পে রূপ নেয় ! তোমার পুরো পৃথিবী কেঁপে ওঠে ! বৃষ্টির দিনে কাঁপা পানিতে নিজেকে দেখে ভয় পাও কি তিলোত্তমা ? যে আয়নাটা তোমাকে দেব তা যেন না ভাঙে তাই নারকেলের খোসা দিয়ে বাঁধিয়ে দেব ! সাথে একটা শুকনো-শক্ত ডাল বেঁধে দেব, যেন সহজে হাতে ধরতে পার আয়নাটা ! এই আয়না কেমন ?  জান কিছু ?? এই আয়না কাঁপে না বৃষ্টি হলে এই আয়নায় মাছ থাকে না হাত ভেজায় না এই আয়নায় স্নান করা যায় না ডুব ও দেয়া যায় না এই আয়নায় তবে এই আয়নায় নিজেকে হুবহু দেখতে পাওয়া যায় তুমি যেমন, ঠিক তেমনি দেখতে পাবে এখানে নিজেকে আমার তিলোত্তমা ...

ফুসফুসে অক্সিজেন টেনে

ছবি
প্রায়ই বিকেল বেলার দিকে আমি আর তুমি টিএসসির দিকে হেঁটে বেড়াতাম।  নয়তো পাশাপাশি বসে থাকতাম। এমন ধরনের পরিবেশে তুমি প্রথমে চুপ থাকতে । প্রায় ঘণ্টাখানেক । তারপর দেশ, সমাজ রাজনীতি নিয়ে এক এক করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে মন থেকে। ওসব কথা আমার কাছে কঠিন লাগে। তাই আমি শুধু শুনে যেতাম। কিছু বুঝতাম না। মাথা নাড়তাম। হা – হু করতাম। তুমি অনর্গল বলে যেতে।  যদিও আমি কিছু বুঝতাম না তবে তোমার অভিব্যক্তি দেখে মনে হত যা বলছ তা সবই যুক্তিযুক্ত। এমনটাই হওয়া চাই। এসব কঠিন কথা বলা শেষ হলে তুমি কিছুক্ষণ বসে থাকতে চুপ হয়ে জোরে জোরে বুক ভরে নিশ্বাস নিতে। নতুন করে বেঁচে থাকার জন্য ফুসফুসে তাজা অক্সিজেন টেনে নিতে। আমিও তোমায় দেখে দেখে এই জঞ্জাল ভরা শহরে নতুন উদ্যমে বেঁচে থাকা ইচ্ছে খুঁজে পেতাম।    বছরখানেক হল তোমার সাথে টিএসসিতে বসে ওসব কঠিন আলাপ শোনা হয় না। বেঁচে থাকার জন্য ফুসফুসে অক্সিজেন টানা হয় না। চারদিকে আজকাল সব মন খারাপ করা ঘটনা ঘটছে তিলোত্তমা ! নিষ্পাপ মানুষকে মেরে ফেলছে, ছোটবাচ্চাগুলিকে মানুষরূপী জানোয়ারগুলি খুবলে খেয়ে ফেলছে ! এগুলি দেখে দেখে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছ...

তবুও আমি কান্না করি না

ছবি
বছরের কয়েকটা রাত এমন হয় যেন পৃথিবীর সব করুণ সুর সেই রাতে কানে ভেসে আসে। ঘুমানোর চেষ্টা করি , পারি না ! অতীতের সব করুণ স্মৃতি মনে পড়তে থাকে। পুরোটা দিন কত প্রাণবন্ত কাটে। হেসে খেলে। কিন্তু রাত হলে সব দিক থেকে করুণ সুর এসে জাপটে ধরে। বাতাসে দুঃখ ভেসে বেড়ায়। পানির টুপটাপ আওয়াজের মধ্যেও কেমন যেন করুণ সুর শুনতে পাই। একদম মন খারাপ হয়ে যায়। আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সেই অন্ধকারও আমাকে জাগিয়ে তোলে করুণ সুর শোনার জন্য। আমার মনে পড়ে যায় ঐন্দ্রিলার কথা। সবচেয়ে হাসিখুশি মেয়েটা কাউকে কিছু না বলে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে সেখানে ঝুলে পড়ল ! ঐন্দ্রিলা যখন বেঁচে ছিল তখন ও সবসময় লাফাত। দুষ্টামি করত। আমার নামটা খুব টেনে বলত – সৃইইইইইইষ্টিইইইইইইইইইই … এমন করুণ রাতে আমি সেই ডাকটা শুনতে পাই , তখন আমাকে চারদিক থেকে শূন্যতা ঘিরে ধরে। আমার দুই কান বন্ধ করে ফেলতে ইচ্ছে হয়। সাদা সাউন্ডবক্সে কিছু মিউজিক বাজতে থাকে। সাথে বৃষ্ট...

খানাখন্দ পেরিয়ে দুই ডজন চুড়ি

ছবি
প্রিয় তিলোত্তমা, আজ তোমার জন্য দুই ডজন চুড়ি কেনা হল। একডজন তোমার প্রিয় রঙের আর অন্য ডজন আমার প্রিয় রঙের। সেগুলি এখন রাখা আছে আমার ঘরের বুকশেলফের বড় বইগুলির পেছনে। কেউ যেন জানতে না পায়, তাই গোপনে রাখা ! অনেক যত্ন করে সেগুলিকে টিএসসি থেকে বাসায় নিয়ে এসেছি। যে পথে আজ বাসায় এসেছি সে পথটা অসংখ্য খানাখন্দে ভরপুর ছিল। মনে হচ্ছিল যে রাস্তা কম – খানাখন্দ বেশি ! তিলোত্তমা, তুমি কি খানাখন্দ চেন ? রাস্তা ভেঙে গিয়ে যদি গর্ত তৈরী হয় তবে তাকে খানাখন্দ বলে। ওরা ফাঁকি দিয়ে রাস্তাটা বানিয়েছিল, তাই এই অবস্থা। আমাদের সম্পর্কে যেন এরকম না হয় ! রিক্সা অনেক কাঁপছিল খানাখন্দগুলি পার হওয়ার সময়ে। ভাবছিলাম সবকটা চুড়ি ভেঙেচুড়ে একাকার হবে। ভাগ্য ভাল ! একটাও ভাঙেনি ! বাসায় এসে দেখি চব্বিশটা চুড়ি’ই বেঁচে আছে ! তিলোত্তমা, আমাদের কিন্তু এখনও দ্যাখা হয়নি। আজ ভাবলাম, প্রথম যেদিন দ্যাখা হবে আমাদের সেদিন তোমাকে এই দুই ডজন চুড়ি উপহার দেব। আমার পাশে বসে নিজ হাতে চুড়ি পড়বে। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখব। চুড়ি পড়া হয়ে গেলে হাত দুটো আমার কানের কাছে এনে হাত নেড়ে চুড়ির শব্দ করবে তুমি। আমি চোখ বন্ধ করে সেই শব্দ...