বাহ, কত সুন্দর একটা সমস্যা
সাতান্ন
হাজার বর্গমাইলের এই দেশটা এক
সমুদ্রের পাড়েই আছে সেই আদিকাল থেকে ! একচুলও নড়েনি দেশটি একাত্তরের পর থেকে !
এই
দেশের পরিবেশ অনেক সুন্দর, মানুষগুলিও সুন্দর, বুদ্ধিমান বটে ! চালাক প্রকৃতির কিছু মানুষও আছে ! আর কাছে কিছু
পশু । পশু হলেও
এরা সুন্দর !
এই
দেশের সবকিছুই সুন্দর, এমনকি সমস্যাগুলিও সুন্দর এবং একই সাথে কৌতুকও বটে !
২
এই
দেশে মানুষ জন্ম নেয় ! অনেকদিন বাঁচে, তারপর একদিন মরে যায় ! এদের মধ্যে কিছু মানুষ থাকে যারা মানুষ হয়েই জন্ম নেয়, মানুষ হয়েই বেঁচে থাকে, মানুষ হয়েই মারা যায় !
কিন্তু
কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের সংখ্যা খুবই অল্পও, তাঁরা মানুষ হয়ে জন্মে, পশু হয়ে বাঁচে, আবার কিভাবে যেন মানুষ হয়েই মারা যায় !
আমার
অবাক লাগে এদের বিচিত্র জীবন দেখে !
মানুষ – পশু - মানুষ
শুধু
জন্ম আর মৃত্যুর সময়ে
এঁরা মানুষ থাকে !
যখন
এরা বেঁচে থাকে তখন এদের বোধ অবশ থাকে আর বিবেক গণ্ডারের
চামড়ার মত হয়ে যায়
! কানকে অদৃশ্য সুইসুতা দিয়ে সেলাই করে রাখে, আর চোখের উপর
রাখে “থোড়াই কেয়ার” মার্কা টিনের চশমা ! এভাবে করেই এঁরা জীবন কাটিয়ে দেয় ।
শেষ জীবনে আবার টাকা খরচ করে হজ্জ করে আসে আর মনে মনে বলে,
“বেহেস্তে যাওয়ার টিকেট পাইসি ! এটারে আলমারিতে লক কইরা রাখি, কে না কে আবার নিয়ে যায় !”
পশুরা
পশু হলেও এদের মত মূর্খ হয়
না কিন্তু ! বোধশক্তি, বিবেক থাকে পশুদের ! ওই যে, গণ্ডারের
কিন্তু চামড়াটাই শুধু কঠিন, বিবেক নয় ! আর এই মানুষগুলির
বিবেকের চামড়া এতই মোটা যে নিমতলী, চকবাজার,
বনানী, গুলশানের আগুনে পুড়তে থাকা মানুষগুলির কষ্ট পৌঁছায় না এদের হৃদয়ে
! বনানীর সেই উঁচু বিল্ডিং থেকে আগুন হতে মুক্তি পেতে ঝাপ দিয়ে পিচের রাস্তায় মানুষের মাথা-হাড়-মেরুদণ্ড ভাঙ্গার দৃশ্য চোখে পড়ে না এই সুন্দর
পশুগুলোর ! কারণ চোখে অদৃশ্য টিনের চশমা ঝুলতে থাকে, যার মার্কা হচ্ছে “থোড়াই কেয়ার” ! কান তো অদৃশ্য সুইসুতা
দিয়ে সেলাই করা তাই বাতাস ভারি করা কান্নার আওয়াজও শোনে না এই পশুগুলো !
আমি
বুঝি না এই পশুগুলা
কিভাবে মানুষ হয়ে যায় মরার সময়ে, জানাযাও পড়া হয়, সবাই আবার হাত তুলে এদের বেহেশত নসিবের জন্য দোয়াও করে !
কৌতুক,
সবই কৌতুক ! কমেডির অভাব নেই !
৩
এই
দেশে আরেকটা মজার জিনিস ঘটে, যারা কাজ জানে ও বোঝে, এবং
সেই সাথে ঘিলুও আছে মাথায় তাদেরকে কেন যেন বসিয়ে রাখা হয়, কাজ করতেই দেয়া হয় না ! কেউ
বসা থেকে উঠে কাজ করতে এলে তাকে আবার বসিয়ে দেয়া হয় !
কিন্তু
এদিকে কি হয়, জানেন
? শুনবেন ?? ইচ্ছে হয় শোনার ?? আপনার
ইচ্ছে বা আগ্রহ না
হলেও আমি বলব, আপনি পড়লে পড়েন, না পড়লে যান
!
এদিকে
যাদের মাথায় ঘিলু নাই, কাজ জানে না তাদেরকেই কাজ
করতে দেয়া হয় ! মানে ওই যে, আমি
ওসব পশুর কথা বলছিলাম !
একটা
কৌতুক বলি, এদের মাথায় ঘিলু নেই কিন্তু ঘিলু খরচ করার সুযোগ এদেরকেই দেয়া হয় ! এরা কাজ জানে না কিন্তু কাজ
করার সুযোগ এদেরকেই দেয়া হয় !
আচ্ছা,
ঘিলু না থাকলে ঘিলু
খরচ করার জায়গায় এদেরকে কেন দেয়া হয় ? তাহলে এরা ঘিলুর পতিবর্তে কি খরচ করে
?!
আজব
ব্যাপার, কৌতুক ও বটে ! যাদের
মাথায় ঘিলু আছে যারা কাজ জানে তাদেরকে কাজ করতেই দেয়া হয় না, তাদের
ঘিলু খরচ করার জন্য কোন সুযোগই দেয়া হয় না !
৪
এই
দেশে পশুদের মৃত্যুতে জানাযা পড়া হয়, পশুগুলি যেন বেহেশতে যায় সেজন্য আয়োজন করে মিলাদ মাহফিল করা হয়, সেই মিলাদে আরও কিছু জীবিত পশু দুই হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করে আর চোখ থেকে
পানি ফেলে যেন তাদের অগ্রজ পশুটির গুনাহ খাতা মাফ করে দেয়া হয় আর যেন
বেহেশতে যায় !
কিন্তু
কেউ জানে না, বোঝেও না – এইসব পশুদের পাপের খাতা বহন করার ক্ষমতা কোন দেবতারও নেই...