ফোটন কণা প্রদর্শনী


আনন্দ পাওয়ার কলমভর্তি কারণ আছে!
লিখব লিখব! সবই লিখব!
আচ্ছা তাহলে, এই ছিল আমার ২য় আলোকচিত্র প্রদর্শনী!
কাঠখোট্টা শুনাচ্ছে নাকি বাংলা “আলোকচিত্র প্রদর্শনী” শব্দটিকে?
আচ্ছা, না হয় ইংলিশেই বলি!
এই ছিল আমার ২য় ফটোগ্রাফি এক্সিবিশন!
এখন বুঝলে তো?

এখন আসি ঘটনা বর্ণণায়।
আমি বলি, তোমরা শোন, কেমন!

এই পর্যন্ত দুটি এক্সিবিশনে আমার তোলা ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে। একটি মিল খুঁজে পেয়েছি এই দুটো এক্সিবিশনে!

আর তা হল – “১ম প্রদর্শনীতে ১টি ছবি”  আর “২য় প্রদর্শনীতে ২ টি ছবি!”
১ম এক্সিবিশনে আমার তোলা দুটি ছবি দেখানো হয়েছিল আর ২য় টিতে ২টি!
এই মহাবিশ্বটি বড্ড সুন্দর! তবে সব সৌন্দর্যই লুকিয়ে থাকে! ওগুলিকে খুঁজে খুঁজে বের করতে হয়! যেমন - অনেক সময় ঘাসের উপর হঠাৎ করে শুয়ে পড়লে আকাশকে অপরিচিত মেহমান বলে মনে হবে! এরকম আরও পাই এর মানের মত অসীম উদাহরণ দেয়া যাবে! কিন্তু তা করলে মূল বিষয় থেকে সরে আসা হবে! তাই ১ টি উদাহরণই থাক!

এক্সিবিশনের কথায় ফিরে আসি।

এবারের এক্সিবিশনে প্রায় চুরানব্বই ভাগ ছবি চমৎকার ছিল!
বাকি ছয়ভাগ ছবি খারাপ! এই অংশ খারাপ অংশ না থাকলে মানুষ বোধহয় সুন্দর ছবিগুলির সৌন্দর্য খুঁজে পেত না! ভাল কে বুঝতে হলে খারাপকে পাশে রাখা চাই, নইলে যে আপেক্ষিকতা তৈরী হবে না!

আসলেই কি তাই?
তা যাই ই হোক না কেন, ভাল ছবিগুলি এত্ত বেশি ভাল ছিল যে ওগুলির দিকে কয়েকঘণ্টা তাকিয়ে থাকা যাবে, পলক না ফেলে!
ভুল বললাম, কারণ পলক ফেলতে না চাইলে চোখের পানি শুকিয়ে যাবে আর তখন পলক ফেলতে না চাইলেও ফেলতেই হবে! এটা মস্তিষ্কের আদেশ চোখের প্রতি!

আরেহ! খালিখালি বকবক করছি! আমার ছবি দুটির কথা তো বললামই না!

এখন বলব! শোন তাহলে!

প্রথম ছবি হচ্ছে – The Untold Face!

এটি খনিকটা জটিল!
বর্ণণা করলে অনেকটা এমন হয় –

ইটের রং এর মত ফুলের টব, গোলমতন করে, এতে বৃষ্টির পানি জমে আছে দু-তিন আঙুল উঁচু হয়ে, জমা পানির নীচে সবুজ শেওলা, আর পানির উপরের অংশে এক জনের মুখের প্রতিবিম্ব!

আর এই একজন হচ্ছেন আমার মা!

তিনি তখন বাগানে বসে ফুল গাছের সাথে ভাব-বিনিময় করছিলেন আর আমি সেই মূহুর্তেই এই ছবিটি তুলি!

তাও আবার কোন বড়সড় ল্যান্স ওয়ালা ক্যামেরা দিয়ে নয়, স্যামসাং মোবাইলের ৮ মেগেপিক্সেল দিয়ে, ৪:৩ অনুপাতে!

আর ফোনটি অবশ্য আমার না! ছবির একজনেরই!

বুঝতে পারলে?

আর এই ছবি তোলার আগে আমি বেশ বড়সড় রকমের বিষন্ন ছিলাম! এখন তা বলব না, কারণ আনন্দের সময় আনন্দের কথা! দুঃখের সময়ও আনন্দের কথা! তবে মাঝে মাঝে হড়বড় করে দুঃখের কথা!


                                     The Untold Face || December, 2017


এখন আসি ২য় ছবিতে, এর শিরোনাম হচ্ছে – Following by Shadow.
এটি সহজ কিন্তু দেখতেও আবার বেশ রুচিপূর্ণ!
সহজ হলেও বর্ণণা দেয়াটা কঠিন হতে পারে!

আচ্ছা, চিন্তা চালিয়ে যাই, পারি কি না বর্ণণা দিতে!

এক বাক্যে বললে, একজন মানুষ ধান মেলতে মেলতে এগিয়ে যাচ্ছেন আর রোদের কারণে তার ছায়া পড়েছে ধানের উপর! আর সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে যে, “ছায়াটি মানুষটিকে অনুসরণ করছে!”   

এই ছবিটি ছিল সাদা-কালো!

রঙিন থেকে সাদা-কালোতে সরে আসার কারণেই ছায়াটিকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে!

                            Following by Shadow || December, 2018
             
আর হ্যাঁ, পুরস্কারও পেয়েছি একটা! ইউনিভার্সিটি লেভেলে প্রথম হওয়ার পুরষ্কার! এমনিতেই আমার আলমারিতে বই-পত্র সহ আর বাকিসব হাবিজাবি জিনিসপত্র রাখার জায়গা পাইনা তার উপর আবার আর একটা ক্রেস্ট!

তবে সবচেয়ে আনন্দের কথাটি তো বললামই না!

প্রদর্শনীটি হয়েছে আমার ছোট কালের স্কুলে! মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালায়! এই স্কুলে পড়া-লেখা করা অবস্থায় হেডস্যার-এর হাত থেকে কোন পুরষ্কার নিত পারিনি কিন্তু বড় হয়ে ফটোগ্রাফির কারণে পেলাম! বেশ আনন্দের ভাবতে গেলে!

আর একটি আনন্দের ঘটনা হয়েছে! এটি অবশ্য দৃশ্য, ঘটনা নয়!
দৃশ্যটি অনেকটা এরকম – আমার দুই খালামণি আমার তোলা ছবির সাথে সেলফি তুলছে! মুখে হাসি আর সেই হাসি হচ্ছে প্রাকৃতিক, একদম মন থেকে! 

এরকম দৃশ্য দেখলে খুবই আনন্দ পাই মনে! 

কলমের ভেতর আরও অনেক গল্প জমা আছে বলার জন্যে! 
জমা থাকুক! পরে শুনাব বাকিগুলি! 
কলম আমার গল্পগুলিকে নিয়ে ঘুমাবে এখন! 
আচ্ছাহ! আমি গেলাম তাহলে! কলমকে ঘুম পাড়িয়ে আসি!  

এই গানটি কলমের জন্যে - 
“ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি মোদের বাড়ি এসো,
 খাট নেই পালং নেই, চোখ পেতে বস!”   



এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হঠাৎ করেই হ-য-ব-র-ল [১]

মায়ের পেটে কাটানো দিনগুলিতে বই পড়া

দারুণ কিছু ক্ষমতা !